গ্লেন ম্যাক্সওয়েল হঠাৎ অবসর নিলেন


আজকের বিডি নিউজ২৪ প্রকাশের সময় : জুন ২, ২০২৫,

স্পোর্টস ডেস্ক :

বিশ্ব ক্রিকেটের এক বিস্ফোরক অধ্যায় শেষ হলো। অস্ট্রেলিয়ার ‘বিগ শো’ গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। ৩৬-বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার জানিয়েছেন, শরীর আর ৫০-ওভারের ধকল নিতে পারছে না, তবে তিনি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দেশের হয়ে খেলতে প্রস্তুত এবং লক্ষ্য রাখছেন ২০২৬-সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে।

ফাইনাল ওয়ার্ড পডকাস্টে দেওয়া এক বিস্তৃত সাক্ষাৎকারে ম্যাক্সওয়েল বলেন, ‘চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর বুঝলাম, শরীর আর সহ্য করতে পারছে না। প্রতি ম্যাচের পরই ব্যথা নিয়ে উঠতে হচ্ছিল। আমি নির্বাচক জর্জ বেইলির সঙ্গে কথা বললাম এবং বললাম, ২০২৭-বিশ্বকাপ পর্যন্ত আমি সম্ভবত খেলতে পারব না। এখনই আমার জায়গার জন্য ভবিষ্যতের কাউকে গড়ে তোলার সময়।

এক ঝলকে ম্যাক্সওয়েলের ওডিআই ক্যারিয়ার :

ম্যাচ : ১৪৯

রান : ৩৯৯০ | গড় : ৩৩.৮১ | স্ট্রাইক রেট : ১২৬.৭০

সেঞ্চুরি : ০৪ (একটি ডাবল সেঞ্চুরি)

উইকেট : ৭৭

ওডিআই বিশ্বকাপ শিরোপা : ২-বার (২০১৫, ২০২৩)

ইতিহাস গড়া ইনিংস-২০২৩ বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে

২০২৩-সালের বিশ্বকাপে মুম্বাইয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে যখন অস্ট্রেলিয়া পড়েছিল ৯১-রানে ৭-উইকেট, তখন একাই ম্যাচ জেতান ম্যাক্সওয়েল। তিনি ২০১-রানে অপরাজিত থেকে প্রথম অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে ওডিআই-তে ডাবল সেঞ্চুরি করেন। এটি ছিল রান তাড়ায় বিশ্বের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি এবং কোনো নন-ওপেনারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিও।

তিনি আরও বলেন, ‘ওটাই ছিল আমার ক্যারিয়ারের শ্রেষ্ঠ মুহূর্ত। এমন এক ইনিংস যেখানে নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে দুনিয়াকে দেখাতে পারলাম-এটাই আমি, এটা আমার সামর্থ্য।

আরও রেকর্ড, আরও গল্প

২০২৩-বিশ্বকাপে ৪০-বলে দ্রুততম সেঞ্চুরি করেন নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে।

২০১৫-বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫১-বলে শতরান ছিল সেই সময়ের দ্রুততম বিশ্বকাপ সেঞ্চুরিগুলোর একটি।

২০২০-সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত চেজে করেছিলেন ম্যাচজয়ী ১০৮-রান।

ব্যাটিংয়ের বাইরে বল হাতে অবদানও কম নয়

২০১৫-বিশ্বকাপে প্রধান স্পিনার হিসেবে খেলেছিলেন ম্যাক্সওয়েল, ৬-উইকেট নেন এবং সেমিফাইনালে বল হাতে ও ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠেন। ২০২৩-বিশ্বকাপে দ্বিতীয় স্পিনার হিসেবে খেলে ৪.৮১-ইকোনমি রেটে বল করেন, ফাইনালে রোহিত শর্মার গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি তুলে নেন পাওয়ারপ্লেতে।

২০১৪-সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি ম্যাচে শেষ ওভারে মাত্র ২-রান ডিফেন্ড করে জেতান ম্যাচ, যেখানে একটি ডাবল উইকেট মেডেন ওভার করেন!

ফিল্ডিং, সেই অদ্বিতীয় ম্যাক্সওয়েল

অভ্যন্তরীণ রিং বা বাউন্ডারির ধারে, যেখানেই থাকুন না কেন, ম্যাক্সওয়েল ছিলেন এক দুর্দান্ত ফিল্ডার। তার দ্রুত রিফ্লেক্স আর ডাইভিং ক্যাচ বহু ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার শ্রদ্ধা, ক্রিকেটবিশ্বের বিদায়

অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচক জর্জ বেইলি বলেন, ‘ওডিআই ক্রিকেটে ম্যাক্সওয়েলের প্রতিভা ও প্রভাব অসাধারণ। দুইটি বিশ্বকাপ জয়ে তার অবদান অবিস্মরণীয়।

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সিইও টড গ্রিনবার্গ বলেন, ‘তার ব্যাটিং বহু দর্শককে স্টেডিয়ামে এনেছে, বহু তরুণকে অনুপ্রাণিত করেছে ব্যাট হাতে নিতে। অস্ট্রেলিয়া তার কাছে ঋণী।

ম্যাক্সওয়েল এখনো টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে উজাড় করে দিতে চান। আইপিএলে আঙুল ভাঙার পর পুনর্বাসনে আছেন, তবে চলতি মাসেই মেজর লীগ ক্রিকেটে (যুক্তরাষ্ট্র) খেলার জন্য ফিট হয়ে ওঠার আশা করছেন এবং থাকবেন অস্ট্রেলিয়ার ক্যারিবিয়ান সফরের টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে, যা শুরু হবে ২০শে-জুলাই।

আজকের বিডি নিউজ২৪/ জাকারিয়া /